গুগল এডসেন্স হলো বিশ্বের সবথেকে বড় এড নেটওয়ারক। যেটা ব্যবহার করে অনেকেই অনলাইন থেকে ইনকাম করে থাকে। গুগল এডসেন্স কে বর্তমান সময়ে সোনার হরিণ বলা যায়।গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে অনলাইন ইনকাম করার জন্য অনেকেই ওয়েবসাইট খুলে থাকে। কিন্তু ব্লগিং এ নতুন হওয়ার কারণে এবং সঠিক দিকনির্দেশনা না পাওয়ার কারণে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এই সমস্যাগুলো সমাধান করতে অনেকেই অনেক ভোগান্তি পোহাতে হয়।
যারা নতুন শুরু করেছেন এবং এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছেন, তাদের মাঝে অনেকেই হয়তো গুগল এডসেন্সের লো ভ্যালু সমস্যা ফেস করেছেন। এই লো ভ্যালু সমস্যার কারণে অনেকেই তাদের নতুন ওয়েব সাইটে গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল নিতে পারেনা। ব্লগিং এ নতুন হওয়ার কারণে এই সমস্যা সঠিক সমাধানও জানেনা।
আজকের এই পোস্টে আমি গুগল এডসেন্সের লো ভ্যালু সমস্যা কিভাবে সমাধান করবেন তা নিয়ে আলোচনা করব।
লো ভ্যালু কনটেন্ট কি?
আপনি যদি লো ভ্যালু কনটেন্ট সমস্যায় পড়ে থাকেন এবং জানেন না লো ভ্যালু কনটেন্ট কি এবং কিভাবে সমাধান করতে হবে তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। লো ভ্যালু সমস্যা তখনই দেখা দেয় যখন আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট গুলোর মত আরো শত শত কনটেন্ট গুগলে থাকে এবং সে সব কন্টেন্ট আপনার কনটেন্ট এর চেয়ে যথেষ্ট ভালো হয়। অর্থাৎ গুগলে ইতোমধ্যে যেসব কনটেন্ট আছে সেগুলোর তুলনায় আপনার কনটেন্ট এর মান যদি কম হয় তখন লো ভ্যালু সমস্যা দেখা দেয়।
গুগল সর্বদা তার ব্যবহারকারীদের মানসম্মত কনটেন্ট সরবরাহ করতে চায়। কিন্তু আপনার কনটেন্ট যদি মানসম্মত না হয় তাহলে গুগল অবশ্যই সেটাকে প্রাধান্য দিবে না।তাই আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট গুণগত মানসম্পন্ন হতে হবে যেনো তা সহজে গুগলে র্যাঙ্ক করে এবং ভিজিটরদের আকৃষ্ট করে।
এডসেন্স লো ভ্যালু কন্টেন্ট সমস্যা সমাধানের উপায়
![]() |
how to fix google adsense low value problem |
নিচে আমি কয়েকটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো যেগুলো আপনি আপনার ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট এর ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে এডসেন্স এর লো ভ্যালু সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।
ইউনিক আর্টিকেল
যেসব বিষয়ে ইতোমধ্যে অনেক ওয়েবসাইটে অসংখ্য আর্টিকেল রয়েছে সেগুলো নিয়ে লিখালিখি করলে গুগল ভ্যালু খুঁজে পায় না।তাই লো ভ্যালু সমস্যা দেখায়।অন্য কোনো ওয়েবসাইটের কন্টেন্ট কপি করলে সেটা আর ইউনিক থাকে না,তেমনি একই বিষয়ে একই রকম করে কন্টেন্ট লিখলে সেটাও আর ইউনিক থাকে না।তাহলে উপায় কি?উপায় হলো অন্যান্য ওয়েবসাইটে যেসব কন্টেন্ট রয়েছে তার চেয়ে ভালো ভাবে আপনাকে লিখতে হবে।তবেই সেই কন্টেন্টে ভ্যালু অ্যাড হবে।
ইংরেজিতে একটা প্রবাদ আছে, "Content is the King" । অর্থাৎ কন্টেন্ট ই সব কিছুর উর্ধ্বে।আপনার যদি কন্টেন্ট ইউনিক থাকে,আপনি গুগল অ্যাডসেন্স অনেক দ্রুত এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।দ্রুত গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার উপায় হচ্ছে ইউনিক আর্টিকেল লেখা।ইউনিক আর্টিকেল না লিখলে গুগল অ্যাডসেন্স এখন আর এপ্রুভাল দেয় না।আপনি যদি মানসম্মত আর্টিকেল লিখতে পারেন তবে গুগল এবং ভিজিটর উভয়ের থেকেই ভ্যালু পাবেন।তাই অনেক ইউনিক কন্টেন্ট লিখতে হবে লো ভ্যালু সমস্যা সমাধান করার জন্য।
শর্ট আর্টিকেল নয়
গুগল এডসেন্সের লো ভ্যালু সমস্যার অন্যতম কারণ হচ্ছে থিন কন্টেন্ট বা শর্ট আর্টিকেল। যারা নতুন শুরু করে থাকে তারা অনেক সময় তাদের আর্টিকেলগুলো বেশি বড় করতে পারে না। যার ফলে গুগল এডসেন্সে এপ্রুভাল পাওয়ার জন্য এপ্লাই করার পর গুগল এডসেন্স থেকে লো ভ্যালু কনটেন্ট দেখিয়ে রিজেক্ট করে দেয়। তাই আপনার কন্টেন্টকে মিনিমাম ৩৫০ ওয়ার্ড এর বেশি হতে হবে। কিন্তু ৭০০ ওয়ার্ড এর বেশি হলে ভালো হয়। তাই আপনি যখন আর্টিকেল লিখবেন তখন ৭০০ ওয়ার্ডের বেশি লেখার চেষ্টা করবেন।
নতুন ব্লগাররা অনেক সময় ৩৫০ ওয়ার্ডেরও কম আর্টিকেল লিখে থাকেন। আর্টিকেল যদি ছোট হয় তাহলে গুগল এড দেখাবে কোথায়? কম শব্দের আর্টিকেল মানে আপনার পেজ ছোট হবে। পেজ ছোট হলে সেই পেজে কয়টি প্লেস করবেন!! আর্টিকেলের এড থেকে সবচেয়ে বেশি রেভিনিউ আসে। আর আপনার আর্টিকেলের পরিমাণ যদি ছোট হয় সেখানে মাত্র কয়েকটা অ্যাড প্লেস করতে পারবেন। এডের পরিমাণ কম মানে রেভিনিউ কম। আর্টিকেলের পরিমাণ কম হলে সেটা এসইও এর ক্ষেত্রে তেমন ভালো প্রভাব ফেলে না। এসইও করার জন্য আর্টিকেলের পরিমাণ বড় করতে হবে তাহলে সেই আর্টিকেলে অনেকগুলো কিওয়ার্ড প্লেস করা যাবে। সেটা এসইও এর ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে।
তাই আর্টিকেল লেখার সময় আপনি অবশ্যই চেষ্টা করবেন আর্টিকেলের পরিমাণটা বড় করে লিখতে। ছয়টা ডিকেল না লিখে বড় আর্টিকেল লিখলে গুগল এডসেন্স এর লোভ্যালু সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন। ফলে সহজেই গুগল এডসেন্স থেকে অনেক ভালো পরিমাণে বিভিন্ন জেনারেট করতে পারবেন।
মিনিমাম কন্টেন্ট
মিনিমাম কন্টেন্ট বলতে এখানে বোঝানো হচ্ছে আপনার সর্বনিম্ন কতটি কন্টেন্ট ওয়েবসাইটে থাকা উচিত। আপনার ওয়েবসাইটে কন্টেন্টের পরিমাণ যদি কম থাকে অর্থাৎ পোস্টের পরিমাণ যদি কম থাকে তাহলে গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেতেই আপনাকে লো ভ্যালু সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। দ্রুত গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার পাওয়ার জন্য আপনার ওয়েবসাইটে কমপক্ষে ২০০০ শব্দের দশটি আর্টিকেল অথবা এক হাজার শব্দের বিশটি আর্টিকেল অথবা ১০০০ শব্দের কম হলে কমপক্ষে ৩০ টি আর্টিকেল লিখতে হবে।
পরিমাণ মতো আর্টিকেল লেখার পর গুগল এডসেন্স এর জন্য এপ্লাই করলে আপনাকে আর লো ভ্যালু সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে না। আপনি যদি ইতিমধ্যে লো ভ্যালু সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন তবে এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য উপরে উল্লেখিত পরিমাণে আর্টিকেল লিখুন এবং আবারো এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার জন্য এপ্লাই করুন।
ভালো সার্চ ভলিউম
সার্চ ভলিউম আছে এমন কি ওয়ার্ড নিয়ে আর্টিকেল লেখা চেষ্টা করুন। সার্চ ভলিউম নেই এমন ইউয়ার্ড নিয়ে আর্টিকেল লিখলে যেমন কোন ভিজিটর পাবেন না সার্চ ইঞ্জিন থেকে ঠিক তেমনি গুগল এডসেন্স থেকেও লো ভ্যালু সমস্যা দেখিয়ে রিজেক্ট করে দিবে। তাই আর্টিকেল লেখার আগে অবশ্যই কিওয়ার্ড রিসার্চ করে নিবেন। যেসব কিওয়ার্ডের সার্চ ভলিউম আছে সেসব ওয়ার্ড নিয়ে লেখার চেষ্টা করুন। ভালো সার্চ ভলিউম আছে এবং ডিফিকাল্টি কম সেসব কীওয়ার্ড নিয়ে আর্টিকেল লিখলে সহজেই গুগলের ফার্স্ট পেজে র্যাঙ্ক করতে পারবেন এবং ভালো পরিমাণে ভিজিটর পাবেন সেই সাথে গুগল এডসেন্স থেকেও সহজেই এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।
গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো পরিমাণে ভিজিটর পেতে আমার এই ব্লগের এসইও টিপস এবং ব্লগিং টিপস সম্পর্কিত পোস্টগুলি দেখতে পারেন। আপনি বিগিনার হলে এসব পোস্ট ফলো করলে সহজেই ব্লগিংয়ে সফল হতে পারবেন।
ট্রাফিক
ট্রাফিক মানে হলো ভিজিটর। আপনার ওয়েবসাইটে যদি কোনো ভিজিটর না আসে তবে আপনার ব্লগিং করার আসল লক্ষ্যই ব্যর্থ হবে। আমরা ব্লগিং করে থাকি আমাদের জানা এবং অজানা বিষয়গুলো অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করে নিতে। কিন্তু আমাদের ওয়েবসাইটে যদি ভালো পরিমাণে ভিজিটর না আসে কিংবা কোনো ভিজিটরই না আসে তাহলে গুগল এডসেন্স থেকে আপনাকে লো ভ্যালু সমস্যা দেখিয়ে রিজেক্ট করে দিবে।
শুধু ট্রাফিক হলেই হবে না অর্গানিক ট্রাফিক হতে হবে। অর্থাৎ গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে আপনার ওয়েবসাইটে ভালো পরিমাণে ট্রাফিক আসতে হবে। অর্গানিক ট্রাফিক হলো গুগল এডসেন্সে দ্রুত অ্যাপ্রভাল পাওয়ার অন্যতম উপায়। আপনার ওয়েবসাইটে যদি কোন ভিজিটর না আসে তবে গুগল এড দেখাবে কাকে? আর এড না দেখালে রেভিনিউ আসবে কোথা থেকে!তাই ব্লগিং করে ইনকাম করার জন্য গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে ভালো পরিমাণ ভিজিটর আনতে হবে।এতে করে লো ভ্যালু সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
উপসংহার
আজকের এই পোস্টে আমি আলোচনা করেছি কিভাবে গুগল এডসেন্স এর লো ভ্যালু সমস্যার সমাধান করতে পারবেন।উপরে আলোচনা করা টপিকগুলো ভালো ভাবে ফলো করে আপনার ওয়েবসাইটে প্রয়োগ করলে অনেক দ্রুত লো ভ্যালু সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাবেন।