আপনি যদি অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে চান তবে গুগল অ্যাডসেন্স সবথেকে বিশ্বস্ত মাধ্যম।গুগল অ্যাডসেন্স দিয়ে টাকা ইনকাম করতে চাইলে আপনার একটি ওয়েবসাইট কিংবা একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে।তবেই আপনি গুগল অ্যাডসেন্স ব্যবহার করে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।শুধু ওয়েবসাইট থাকলেই হবে না,ওয়েবসাইটের জন্য ভালো মানের কন্টেন্ট লিখতে হবে এবং ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভিডিও বানাতে হবে।
![]() |
Get google adsense approval fast |
আপনি যদি এডসেন্স দিয়ে টাকা ইনকাম করার জন্য ওয়েবসাইট বানিয়ে থাকেন,তবে আপনাকে সেই ওয়েবসাইটে আমাদের এই ওয়েবসাইটের মত আর্টিকেল লিখতে হবে।সেসব বিষয়ে লিখালিখি করতে হবে যেগুলো মানুষ প্রতিনিয়ত সার্চ করে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে।যেমন : গুগলে আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় কিছু জানতে সার্চ করি।আপনি চাইলে শিক্ষা, টেকনোলজি, স্বাস্থ্য, ইত্যাদি বিষয়ে লিখালিখি করতে পারেন। আপনি যদি নতুন ব্লগিং শুরু করেন এবং জানেন না কোন নিশ নিয়ে ব্লগিং শুরু করলে দ্রুত সফলতা লাভ করবেন তাহলে আমার এই ব্লগে লাভজনক ব্লগিং নিশ আর্টিকেলটি দেখতে পারেন।
আপনার যদি একটি ইউটিউব চ্যানেল থাকে তবে আপনি সেই চ্যানেলে ভিডিও বানিয়ে টাকা ইনকাম করতে পারেন। এর জন্য আপনাকে প্রতিনিয়ত কোয়ালিটি সম্পন্ন ভিডিও বানাতে হবে। গুগল এডসেন্স কি এবং গুগল এডসেন্স থেকে কিভাবে টাকা ইনকাম করতে পারবেন সে বিষয়ে আমার এই ব্লগে একটি আর্টিকেল আছে চাইলে সেটি দেখে নিতে পারেন।
গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পেতে করণীয় সমূহ :
আপনার ওয়েবসাইটে দ্রুত গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পেতে নিচে উল্লেখ করা সবগুলো টিপস ফলো করুন এবং আপনার ওয়েবসাইটে প্রয়োগ করুন।তাহলে আপনি দ্রুত গুগল অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল ( fast google adsense approval) পেয়ে যাবেন।
১. কোয়ালিটি সম্পন্ন কিছু পোস্ট লিখতে হবে। আপনি চাইলে ২০০০ শব্দের দশটি আর্টিকেল কিংবা ১০০০ শব্দের ২০টি আর্টিকেল অথবা এক হাজার শব্দের কম শব্দের ৩০ টি আর্টিকেল লিখতে পারেন। দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার অন্যতম শর্ত হলো বড় বড় কন্টেন্ট লেখা। আপনার কনটেন্টের পরিমাণ যদি বড় হয় তাহলে অল্প সময়ে অল্প কন্টেন্ট দিয়েই গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।
২. অনেক এভাবে ডোমেইনের বয়স গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেতে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কিন্তু অনেকেই বলেন ডোমাইনের বয়স এডসেন্স এপ্রুভাল পেতে কোনো ভূমিকা রাখেনা। তবে ডোমেইনের বয়স দুই থেকে তিন মাস হলে সহজেই এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়া যায়।
৩. আপনার ওয়েবসাইটের ডিজাইন ইউজার ফ্রেন্ডলি এবং মোবাইল ফ্রেন্ডলি হতে হবে। অর্থাৎ ইউজাররা যেন সহজেই ডেস্কটপ কিংবা মোবাইল থেকে আপনার ওয়েবসাইট সুন্দরভাবে ব্রাউজ করতে পারে। আপনার ওয়েবসাইটটি অবশ্যই রেসপন্সিভ হতে হবে, যেন ভিজিটররা সহজেই আপনার পুরো ওয়েবসাইটটি ঘুরে দেখতে পারে কোন ধরনের এরর ফেস করা ছাড়াই।
৪. গুগল এডসেন্স এর বিজ্ঞাপন দেখাতে একজন পাবলিশার হিসেবে আপনার বয়স ১৮ বছর হতে হবে। তবেই আপনি এডসেন্সের জন্য এপ্লাই করতে পারবেন। এখানে ১৮ বছর বয়স বলতে বুঝানো হয়েছে গুগল এডসেন্সের জন্য জন্য এপ্লাই করার আগে আপনাকে যে ফর্মটি পূরণ করতে হবে সেখানে আপনার জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য দিতে হবে। কিন্তু আপনার বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয় তাহলে আপনার কোন জাতীয় পরিচয় পত্র থাকবে না আর জাতীয় পরিচয়পত্র না থাকলে আপনি গুগল এডসেন্স এর উক্ত ফরম পূরণ করতে পারবেন না।
৫. আপনার ওয়েবসাইটের নেভিগেশন ঠিক থাকতে হবে। নয়তো এডসেন্সের জন্য অ্যাপ্লাই করার পর গুগল এডসেন্স আপনার ওয়েবসাইট কে রিজেক্ট করে দিবে। তাই গুগল এডসেন্সের জন্য এপ্লাই করার পূর্বে ওয়েবসাইটের নেভিগেশন ঠিক রাখুন।
৬. আপনার ওয়েবসাইটে কোন ধরনের কপি করা কনটেন্ট রাখা যাবে না। নয়তো গুগল আপনার ওয়েবসাইটে এডসেন্সের এপ্রুভাল দিবে না। আপনার ওয়েবসাইটের লেখাগুলো ১০০% ইউনিক হতে হবে। তাহলে দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।
৭. একজন ব্যক্তির জন্য শুধুমাত্র একটি গুগল এডসেন্স একাউন্ট প্রযোজ্য। তাই আপনার ডিভাইসে যদি একাধিক গুগল এডসেন্স একাউন্ট থাকে তবে বাকিগুলো বন্ধ করে শুধুমাত্র একটি এডসেন্স একাউন্ট খোলা রাখুন। নয়তো একাধিক এডসেন্স অ্যাকাউন্টের কারণে আপনার ওয়েবসাইট রিজেক্ট করে দিবে।
৮. গুগল এডসেন্স ব্যতীত অন্য কোন অ্যাড নেটওয়ার্কের অ্যাড আপনার ওয়েবসাইটে থাকলে গুগল এডসেন্স আপনার ওয়েবসাইটের জন্য গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল রিকোয়েস্ট রিজেক্ট করে দিবে। তাই গুগল এডসেন্স এর প্রভাব পাওয়ার আগে অন্য কোন আইডি নেটওয়ার্কের অ্যাড আপনার ওয়েবসাইটে ব্যবহার করবেন না।
৯. এডসেন্স এপ্রুভাল পেতে আপনার ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্গানিক ভিজিটর আসতে হবে। ভিজিটর গুলো সব অর্গানিক উপায়ে আসতে হবে। অর্গানিক বলতে গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে আসতে হবে।
১০. কপিরাইট মুক্ত ছবি ব্যবহার করতে হবে। গুগল থেকে কোন ছবি নিয়ে সেটা ব্লগে ব্যবহার করা যাবে না। কপিরাইট যুক্ত বা অন্যের ছবি নিজের ওয়েবসাইটে ব্যবহার করলে সেটাকে নিজের কন্টেন্ট বলা যায় না। কিন্তু গুগল এডসেন্স এর শর্ত হলো আপনার ওয়েবসাইটে আপনার নিজস্ব কন্টেন্ট থাকতে হবে।
১১. ১৮+ কোন ধরনের কনটেন্ট লেখা যাবে না। কোন ধরনের এডাল্ট কনটেন্ট এবং অবৈধ কনটেন্ট ওয়েবসাইটে রাখা যাবে না। এটা গুগল এডসেন্সের শর্তাবলির বাইরে।
১২. আপনার ওয়েবসাইটে একটি প্রফেশনাল থিম ব্যবহার করতে হবে। সহজে নেভিগেশন করা যায় এমন থিম ব্যবহার করতে হবে। কোন ধরনের ক্র্যাক থিম ব্যবহার করা যাবে না। আপনি চাইলে আমার এই ব্লগে ব্লগার টেমপ্লেটের পোস্টগুলি দেখতে পারেন।
১৩. ওয়েবসাইটের মেনু থাকতে হবে এবং মেনুতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পেজ থাকতে হবে যেমন : about us , contact us , privacy policy , disclaimer , terms of use ইত্যাদি। গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পেতে অবশ্যই এই পাঁচটি পেজ আপনার ওয়েবসাইটে থাকতে হবে। নয়তো গুগল এডসেন্স থেকে আপনাকে রিজেক্ট করে দিবে।
১৪. আপনার ওয়েবসাইটটি ফাস্ট লোড হতে হবে। আপনাকে ফাস্ট লোডিং ব্লগার টেমপ্লেট ব্যবহার করতে হবে। ভিজিটররা আপনার ওয়েবসাইট ভিজিট করার সময় যদি দেখে আপনার ওয়েবসাইট লোড নিতে অনেক সময় নিচ্ছে তাহলে তারা আপনার ওয়েবসাইট ছেড়ে অন্য ওয়েবসাইটে চলে যাবে। যেটা এসইও এর জন্য অনেক বাজে প্রভাব ফেলবে। তাই আপনার ওয়েবসাইটটি ফাস্ট লোড নেই কিনা তা গুগলের পেজস্পিড ইনসাইট দিয়ে চেক করে নিতে হবে।
১৫. গুগল ওয়েবমাস্টারে আপনার ওয়েবসাইট সাবমিট করতে হবে। আপনার ওয়েবসাইটের পোস্টগুলো গুগল সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স হতে হবে। আপনার লেখা পোস্টগুলো যদি গুগলে ইনডেক্স না হয় তাহলে গুগল সার্চ ইঞ্জিন থেকে কোন ধরনের ভিজিটর আসবে না। আর গুগল এডসেন্স দিতে এপ্রুভাল পাওয়ার অন্যতম শর্ত হলো অর্গানিক ভিজিটর। আর ইউ অর্গানিক ভিজিটর পেতে আপনার ওয়েবসাইটের সবগুলো পোস্ট গুগল সার্চ ইঞ্জিনে ইনডেক্স করাতে হবে।
১৬. ওয়েবসাইটে কোন ধরনের ৪০৪ ইরর পেজ থাকা যাবে না। ইরর হলো সেগুলো যেসব পেজের লিংক ডেড হয়ে গেছে। গুগল এডসেন্সের জন্য এপ্লাই করার পূর্বে ওয়েবসাইটে কোন ধরনের ৪০৪ এরর আছে কিনা তা চেক করে ঠিক করে নিবেন। নয়তো গুগল এডসেন্স থেকে আপনাকে রিজেক্ট করে দিবে এবং বলবে সাইট আন্ডার মেইনটেনেন্স।
১৭. কোন ধরনের আউটবাউন্ড লিংক ওয়েবসাইটে রাখবেন না। আউট বাউন্ড লিঙ্ক খেলো সেসব লিংক যেগুলো একজন ভিজিটরকে অন্য ওয়েবসাইটে নিয়ে যায় আপনার ওয়েবসাইট থেকে। গুগল এডসেন্সের শর্ত অনুযায়ী আপনি আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটরকে কোন ধরনের স্প্যাম বা অন্য ধরনের ওয়েবসাইটে পাঠাতে পারবেন না।
১৮. টপ লেভেল কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করতে হবে।আপনি চাইলে Blogger এর সাবডোমেইন ব্যবহার করতে পারেন।এতে করে অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পাবেন,তবে টপ লেভেল কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করলে যত পরিমাণ ভিজিটর লাগতো,তার চেয়ে বেশি ভিজিটর লাগবে।এবং এপ্রুভাল পেতে একটু বেশি সময় লাগবে।ডোমেইন যদিওবা অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল পেতে ম্যাটার করে না,কিন্তু টপ লেভেল কাস্টম ডোমেইন ব্যবহার করে দ্রুত এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন।এছাড়া আপনি যদি ফ্রী কিংবা অন্য কোনো সাবডোমেইনে অ্যাডসেন্স এপ্রুভাল নিয়ে ফেলেন তাহলে পরবর্তীতে আপনার ব্লগটি বড় হলে আফসোস করতে হবে।কারণ ডোমেইন নেম হলো আপনার ব্লগের ব্র্যান্ড।
সবশেষে বলবো আপনি যদি এই ১৮ টি নিয়ম মেনে চলেন তবে গুগল এডসেন্স থেকে দ্রুত এপ্রুভাল পেয়ে যাবেন। এবং গুগল এডসেন্স ব্যবহার করে অনলাইন থেকে টাকা ইনকাম করতে পারবেন।
উপসংহার
আজকের এই পোস্টে আমি দ্রুত গুগল এডসেন্স এপ্রুভাল পাওয়ার গাইডলাইন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। আপনি যদি উপরে উল্লেখিত সবগুলো টিপস সঠিকভাবে আপনার ওয়েবসাইটে প্রয়োগ করেন তবে দ্রুত গুগল পেয়ে যাবেন। ইউটিউব চ্যানেলের জন্য গুগল এডসেন্স দ্রুত পাওয়ার উপায় হলো মানসম্মত ভিডিও বানানো এবং দ্রুত ৪০০ ঘন্টা ওয়াচ টাইম এবং ১০০০ সাবস্ক্রাইবার পূর্ণ করা। এই শর্তগুলো পূরণ করতে পারলেই আপনি ইউটিউবে জন্য দ্রুত গুগল এডসেন্স পেয়ে যাবেন।
আমি এই পোস্টে গুগল এডসেন্স অ্যাপ্রুভাল পাওয়ার জন্য যেসব নিয়ম নীতি অনুসরণ করা দরকার তার সবগুলো তুলে ধরেছি। আপনি আপনার ওয়েবসাইট কিংবা ইউটিউব চ্যানেলে গুগল এডসেন্স দ্রুত এপ্রুভাল পেতে এই নিয়মগুলো ফলো করতে পারেন। পোস্ট সম্পর্কে যে কোন মতামত কমেন্ট বক্সে জানাতে পারেন। পোস্টটি থেকে যদি আপনার কোন উপকার হয় তবে অবশ্যই বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন।আল্লাহ হাফেজ।